ইনকগনিটো মোড কী এবং কতটা নিরাপদ | সম্পূর্ণ বাংলা গাইড
অনেক সময় আমরা অন্যের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করি। সেক্ষেত্রে ব্রাউজিংয়ের সময় ব্যক্তিগত তথ্য বা লগইন ডেটা ওই যন্ত্রে সংরক্ষিত হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যার সরল সমাধান হলো ইনকগনিটো বা প্রাইভেট মোড ব্যবহার করা। বর্তমানে অনলাইন গোপনীয়তার গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবহারকারী নিয়মিতভাবেই ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করছেন।
গুগল ক্রোমে এই ফিচারটি বাংলায় ‘ছদ্মবেশী মোড’ নামে দেখা যায়। ক্রোমে ইনকগনিটো মোড চালু করলে একটি বার্তা দেখায়, যেখানে বলা হয় যে এই যন্ত্রে অন্য কেউ আপনার ব্রাউজিং ইতিহাস দেখতে পাবে না। ফলে ব্যক্তিগতভাবে ব্রাউজ করাটা সহজ হয়।
তবে অনেকে মনে করেন, ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করলেই অনলাইনে সবকিছু পুরোপুরি গোপন হয়ে যায়। বাস্তবে এটি আংশিক সত্য। এই মোড কেবল যন্ত্রভিত্তিক গোপনীয়তা দেয়, নেটওয়ার্ক স্তরে নয়।

ইনকগনিটো মোড কী করে?
ইনকগনিটো মোড চালু করলে ব্রাউজার স্থানীয়ভাবে তথ্য ব্যবস্থাপনায় কিছু পরিবর্তন আনে। যেমন:
- আপনি কোন ওয়েবসাইট দেখেছেন, তার ইতিহাস ব্রাউজারে রাখা হয় না
- সেশন চলাকালীন তৈরি হওয়া কুকি ও সাইট ডেটা উইন্ডো বন্ধ হলেই মুছে যায়
- অটো ফিল, লগইন তথ্য বা ফরম ডেটা ব্যবহার করা হয় না
তবে কিছু বিষয় ইনকগনিটো মোডেও যন্ত্রে থেকেই যায়:
- ডাউনলোড করা ফাইল
- বুকমার্ক
অর্থাৎ, যদি আপনি এমন কম্পিউটার ব্যবহার করেন যেটি অনেকেই ব্যবহার করেন, সেখানে আপনার ব্রাউজিং ইতিহাস লুকাতে ইনকগনিটো মোড বেশ কার্যকর। তবে এটি শুধু ডিভাইস লেভেলের গোপনীয়তা দেয়, নেটওয়ার্ক লেভেলে নয়।
ইনকগনিটো মোডের সীমাবদ্ধতা
নামে ‘প্রাইভেট’ হলেও এই মোড আপনার অনলাইন পরিচয় পুরোপুরি আড়াল করতে পারে না। কারণ:
- আপনার ওয়েব ট্রাফিক আইএসপি বা কর্মস্থলের নেটওয়ার্ক প্রশাসক দেখতে পারেন
- যে ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন, তারা ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ও ব্রাউজার ফিঙ্গারপ্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে আপনাকে শনাক্ত করতে পারে
- আপনার আইপি ঠিকানা দৃশ্যমান থাকে
- ভিপিএন ছাড়া আইপি লুকানো সম্ভব নয়
- ম্যালওয়্যার, কিলগার বা ফিশিং আক্রমণ থেকেও এটি আপনাকে রক্ষা করে না
অর্থাৎ, ইনকগনিটো মোড গোপনীয়তার একটি উপায় হলেও এটি পূর্ণ নিরাপত্তার সমাধান নয়।
ইনকগনিটো মোড কীভাবে চালু করবেন?
ব্রাউজারভেদে ইনকগনিটো মোড চালুর পদ্ধতি ভিন্ন:
গুগল ক্রোম
- থ্রি ডট মেনু → New Incognito Window
- শর্টকাট:
- Windows: Ctrl + Shift + N
- Mac: Command + Shift + N
অ্যাপল সাফারি
- File মেনু → New Private Window
- ম্যাক শর্টকাট: Shift + Command + N
আইফোন ও আইপ্যাড
- Safari → Tabs আইকন → Private নির্বাচন করুন
আরও শক্তিশালী গোপনীয়তার বিকল্প
শুধু ইনকগনিটো মোড দিয়ে ট্র্যাকিং থেকে সম্পূর্ণ রক্ষা পাওয়া যায় না। আরও শক্তিশালী গোপনীয়তার জন্য
ভিপিএন
ইন্টারনেট ট্রাফিক এনক্রিপ্ট করে এবং আইপি ঠিকানা আড়াল করে। এতে নেটওয়ার্ক লেভেলে গোপনীয়তা বাড়ে।
টর ব্রাউজার
টর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনার ট্রাফিক বিভিন্ন নোডে ঘুরে যায়, ফলে শনাক্ত করা কঠিন হয়। গতি তুলনামূলক কম হলেও গোপনীয়তা বেশি।
প্রাইভেসি-কেন্দ্রিক ব্রাউজার ও সার্চ ইঞ্জিন
কিছু ব্রাউজার ও সার্চ ইঞ্জিন এতে ট্র্যাকিং কম রাখে, ফলে নজরদারি কম হয়।
উপসংহার
ইনকগনিটো মোড দৈনন্দিন ব্যবহারকারীদের জন্য একটি সহজ ও কার্যকর ডিভাইস-লেভেল গোপনীয়তার ব্যবস্থা। তবে এটি পূর্ণ নিরাপত্তা দেয় না। নেটওয়ার্ক লেভেলে গোপন থাকতে হলে ভিপিএন, টর বা প্রাইভেসি-কেন্দ্রিক ব্রাউজারের মতো অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
1. ইনকগনিটো মোড কি সম্পূর্ণ গোপনীয়তা দেয়?
না। ইনকগনিটো মোড শুধু যন্ত্রভিত্তিক গোপনীয়তা দেয়। আপনার আইএসপি, কর্মস্থলের নেটওয়ার্ক অ্যাডমিন এবং সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট এখনো আপনার কার্যকলাপ দেখতে পারে।
2. ইনকগনিটো মোডে কি ব্রাউজিং ইতিহাস সেভ হয়?
না। আপনি যে ওয়েবসাইটগুলো ভিজিট করেন তার ইতিহাস ব্রাউজারে সংরক্ষণ হয় না।
3. ইনকগনিটো মোডে কুকি কি থাকে?
সেশন চলাকালীন কুকি তৈরি হয়, কিন্তু উইন্ডো বন্ধ হলেই সব মুছে যায়।
4. ইনকগনিটো মোড কি আইপি ঠিকানা লুকায়?
না। ইনকগনিটো মোড আইপি লুকায় না। আইপি লুকাতে হলে ভিপিএন প্রয়োজন।
5. ডাউনলোড করা ফাইল কি ইনকগনিটো মোডে লুকানো থাকে?
না। ডাউনলোড করা ফাইল আপনার ডিভাইসেই থেকে যায় এবং যে কেউ দেখতে পারে।
6. ইনকগনিটো মোড কি ম্যালওয়্যার বা ফিশিং আক্রমণ থেকে রক্ষা করে?
না। ইনকগনিটো মোড সাইবার আক্রমণ থেকে আপনাকে রক্ষা করে না।
7. কোন ব্রাউজারে কীভাবে ইনকগনিটো মোড চালু করব?
ক্রোমে Ctrl+Shift+N, সাফারিতে Shift+Command+N এবং মোবাইল সাফারিতে ‘Private’ মোড নির্বাচন করলেই হবে।
8. আরও শক্তিশালী গোপনীয়তা পেতে কী ব্যবহার করা উচিত?
ভিপিএন, টর ব্রাউজার বা প্রাইভেসি-কেন্দ্রিক ব্রাউজার ব্যবহার করলে গোপনীয়তা আরও বাড়ে। { “@context”: “https://schema.org”, “@type”: “FAQPage”, “mainEntity”: [ { “@type”: “Question”, “name”: “ইনকগনিটো মোড কি সম্পূর্ণ গোপনীয়তা দেয়?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “না। ইনকগনিটো মোড শুধু যন্ত্রভিত্তিক গোপনীয়তা দেয়। আইএসপি, নেটওয়ার্ক অ্যাডমিন এবং ওয়েবসাইট এখনো কার্যকলাপ দেখতে পারে।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “ইনকগনিটো মোডে কি ব্রাউজিং ইতিহাস সেভ হয়?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “না। ইনকগনিটো মোডে ভিজিট করা সাইটগুলোর ইতিহাস ব্রাউজারে সংরক্ষণ হয় না।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “ইনকগনিটো মোডে কুকি কি থাকে?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “সেশন চলাকালীন কুকি তৈরি হলেও উইন্ডো বন্ধ হলে সব কুকি মুছে যায়।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “ইনকগনিটো মোড কি আইপি ঠিকানা লুকায়?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “না। ইনকগনিটো মোড আইপি ঠিকানা লুকায় না। আইপি গোপন করতে ভিপিএন প্রয়োজন।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “ডাউনলোড করা ফাইল কি ইনকগনিটো মোডে লুকানো থাকে?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “না। ডাউনলোড করা ফাইল ডিভাইসেই থেকে যায় এবং অন্যরা তা দেখতে পারে।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “ইনকগনিটো মোড কি ম্যালওয়্যার বা ফিশিং আক্রমণ থেকে রক্ষা করে?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “না। ইনকগনিটো মোড সাইবার আক্রমণ বা ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম নয়।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “কীভাবে ইনকগনিটো মোড চালু করব?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “ক্রোমে Ctrl+Shift+N, সাফারিতে Shift+Command+N এবং আইফোনে Safari-তে Tabs আইকনে চাপলে Private মোড নির্বাচন করা যায়।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “আরও গোপনীয়তা চাইলে কী ব্যবহার করা উচিত?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “ভিপিএন, টর ব্রাউজার বা প্রাইভেসি-কেন্দ্রিক ব্রাউজার ব্যবহার করলে নেটওয়ার্ক ও অনলাইন ট্র্যাকিং কমে।” } } ] }
