সফটওয়্যার কি ও কত প্রকার ও কি কি?
সফটওয়্যার কি?
সফটওয়্যার হলো কম্পিউটারকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য তৈরি প্রোগ্রাম, ডেটা এবং নথিপত্রের সংকলন। এটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে কিভাবে কাজ করতে হবে তা বলে দেয়। সফটওয়্যার ছাড়া, কম্পিউটার শুধুমাত্র ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের একটি সংগ্রহ।
সফটওয়্যার কাকে বলে
সফটওয়্যার হলো কম্পিউটারের নির্দেশাবলী এবং ডেটার একটি সেট যা কম্পিউটারকে কিভাবে কাজ করতে হবে তা বলে দেয়। সহজভাবে বলতে গেলে,
সফটওয়্যারের প্রকারভেদ:
সফটওয়্যারকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়:
1. সিস্টেম সফটওয়্যার
সিস্টেম সফটওয়্যার হলো কম্পিউটারের মৌলিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত সফটওয়্যার। এটি ব্যবহারকারীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে না। সিস্টেম সফটওয়্যারের কিছু উদাহরণ:
- অপারেটিং সিস্টেম: উইন্ডোজ, ম্যাক ওএস, লিনাক্স, অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস
- ডিভাইস ড্রাইভার: প্রিন্টার, স্ক্যানার, ক্যামেরার জন্য ড্রাইভার
- প্রোগ্রামিং ভাষা: সি++, জাভা, পাইথন
- ইউটিলিটি সফটওয়্যার: ডিফ্র্যাগমেন্টার, অ্যান্টিভাইরাস
2. অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার হলো ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে সাহায্য করার জন্য তৈরি সফটওয়্যার। এটি ব্যবহারকারীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে। অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারের কিছু উদাহরণ:
- ওয়ার্ড প্রসেসিং: মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, ওপেনঅফিস
- স্প্রেডশীট: মাইক্রোসফট এক্সেল, লিব্রেঅফিস ক্যালক
- প্রেজেন্টেশন: মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট, লিব্রেঅফিস ইম্প্রেস
- মাল্টিমিডিয়া: উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার, VLC মিডিয়া প্লেয়ার
- গেম: ক্যান্ডি ক্রাশ, PUBG
3. প্রোগ্রামিং সফটওয়্যার
প্রোগ্রামিং সফটওয়্যার হলো নতুন সফটওয়্যার তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত সফটওয়্যার। প্রোগ্রামাররা এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে প্রোগ্রামিং ভাষায় কোড লিখে নতুন অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে। প্রোগ্রামিং সফটওয়্যারের কিছু উদাহরণ:
- কম্পাইলার: GCC, Clang
- ইন্টারপ্রেটার: Python interpreter, JavaScript interpreter
- ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট (IDE): Visual Studio Code, Eclipse
এই তিনটি প্রধান ভাগ ছাড়াও, আরও কিছু বিশেষ ধরণের সফটওয়্যার রয়েছে, যেমন:
ওয়েব সফটওয়্যার
- ওয়েব ব্রাউজার: ক্রোম, ফায়ারফক্স, সাফারি, এজ (ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট দেখতে এবং ইন্টারনেটের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যবহার করে)
- ওয়েব সার্ভার: আপাচি, এনজিনেক্স (ওয়েবসাইটের ফাইল সংরক্ষণ করে এবং ব্যবহারকারীদের অনুরোধে সেগুলো সরবরাহ করে)
মিডলওয়্যার সফটওয়্যার
- অ্যাপ্লিকেশন সার্ভার (অ্যাপ্লিকেশন চালানোর জন্য একটি পরিবেশ সরবরাহ করে)
- ডাটাবেস সার্ভার (ডাটা স্টোরেজ এবং ম্যানেজমেন্ট পরিচালনা করে)
এমবেডেড সফটওয়্যার
- স্মার্টফোন, স্মার্ট টিভি, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদির মতো এমবেডেড ডিভাইসগুলিতে চালানো হয়।
অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার
- মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম (অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস)
- ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেম (উইন্ডোজ, ম্যাক ওএস, লিনাক্স)
সহায়ক সফটওয়্যার
- অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার (কম্পিউটারকে ভাইরাস এবং মালওয়্যার থেকে সুরক্ষা করে)
- ডাটা ব্যাকআপ সফটওয়্যার (ডাটা হারিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাকআপ তৈরি করে)
- ফাইল কম্প্রেশন সফটওয়্যার (ফাইলের আকার ছোট করে)
ওপেন সোর্স সফটওয়্যার
এই সফটওয়্যারের কোড সবার জন্য উন্মুক্ত, যে কেউ এটি পরিবর্তন এবং পুনঃবিতরণ করতে পারে। (লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম, VLC মিডিয়া প্লেয়ার ইত্যাদি)
ক্লোজড সোর্স সফটওয়্যার
এই সফটওয়্যারের কোড গোপন থাকে, শুধুমাত্র সফটওয়্যার নির্মাতাই এটি পরিবর্তন করতে পারে। (মাইক্রোসফট অফিস, অ্যাডোবি ফটোশপ ইত্যাদি)
এই আলোচনা সফটওয়্যারের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা দিয়েছে। প্রযুক্তি ক্রমাগত এগিয়ে চলছে, তাই নতুন ধরনের সফটওয়্যারও তৈরি হচ্ছে। আপনার যদি কোনো নির্দিষ্ট ধরনের সফটওয়্যার সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা হয়, তাহলে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।